প্রকাশিত: Tue, Apr 23, 2024 12:07 PM আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 11:43 PM
মানসিক সমস্যা : নার্সিসিসম অ্যান্ড গ্রান্ডিওসিটি
শোয়েব সাঈদ : মাঝে মধ্যে সামজিক মাধ্যমে অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের জীবনে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এবং একই সাথে খুবই অবহেলিত। একটি বিশেষ অভিজ্ঞতায় কৌতূহল কাজ করছিলো কোন ধরনের মানসিক অসুস্থতায় মানুষ আমিত্বের প্রকাশে খুব নিচু রুচিবোধ ধারণ করে। কথা বললাম যুক্তরাষ্ট্রের একজন মনোবিজ্ঞানী/চিকিৎসকের সাথে। উনার সাথে কথোপকথনটি কিছুটা সহজবোধ্য ভাষায় (টেকনিক্যাল পয়েন্টে নয়) শেয়ার করতে ইচ্ছে হোল। মোটা দাগে মানসিক অসুস্থতার দুটো প্যাটার্ন: অপ্রকৃতিস্থতা আর পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার বা ব্যক্তিত্বের অসুখ।
অপ্রকৃতিস্থতায় আক্রান্তরা নিজেরাই মূলত ভিকটিম। কিন্তু পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারে আক্রান্তরা চারপাশের পরিবেশ বিষিয়ে রেখে মূলত বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের ভিকটিম বানায়। পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারের অনেক ধরন। বিষাক্ত দুটো ধরন হচ্ছে নার্সিসিসম আর গ্রান্ডিওসিটি। ফালতু ফুটানি, চাপাবাজি আর অন্যের প্রতি চরম অশ্রদ্ধাশীলতা যার মূল উপসর্গ এবং এরা মূলত হিংসুটে মাকাল ফল টাইপের হয়।
নার্সিসিসমে নিজের সবকিছুকে বিশাল কিছু মনে হয় এবং এই ‘বিশালত্বের’ আসক্তিতে চারপাশের বন্ধু-বান্ধবদের যোগ্যতার ব্যাপকতা নিয়ে ধারণাই তৈরি হয় না। নিজের যে কাজটি সে মুগ্ধ, সেই একই কাজ তার অনেক বন্ধুরা অনেক আগেই করে রেখেছে এবং বন্ধুদের কাছে কাজটি আহামরি কিছু নয় বরং রুটিন সেটি তার বিশ্বাস হয়না। হিংসা আর তুলনা করার মুদ্রাদোষে কোন বন্ধুর সুইমিং পুলে সাঁতার কাটার স্বাভাবিক বিষয়ে সে হীনমন্যতায় ভুগে এবং তৎক্ষণাৎ সে কোথায় কোন সুইমিংপুলের সদস্য ছিল অতীতাশ্রয়ী তুলনা দিতে কুণ্ঠিত হয় না।
এই দেওলিয়াপনায় কেউ তার সীমাবদ্ধতা দেখিয়ে দিলে বিস্ফোরিত হয়ে পরিবেশ সমাজকে বিষাক্ত করে তুলে। নার্সিসিসম বজার রাখতে ওরা ভীষণ লজ্জাহীন আর চরম বেহায়া টাইপের হয়। এরা মূলত ভীষণ স্বার্থপর আর নিঃসঙ্গ টাইপের এবং মানুষের সাথে বনিবনা তেমন থাকেনা। গ্রীক পুরানে বর্তমান তুরস্কের ইজমিরে নার্সিসিসাস নামক এক শিকারী বালক (নদী দেবতার ছেলে) পানিতে তার নিজের প্রতিবিম্বের প্রেমে আসক্ত হয়ে ধারণা জন্মায় যে তার মত এত সুন্দর আর কেউ নেই। এই ধারণায় চারপাশের পরিবেশ বিষিয়ে দিয়ে সে প্রবল ব্যক্তিকেন্দ্রিকতায় জীবন কাটিয়ে দেয়।
এই ধরনটি ছোটবেলা থেকে তৈরি হয় এবং এদের সহপাঠী, আত্মীয়স্বজনদের কাছে চাপাবাজির স্বভাবটি স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। আমাদের সমাজে এটি অন্যকে ছোট করে আনন্দ লাভের সাথে বানিয়ে মিথ্যে বলা আর ফটকাবাজির দিকে প্রলুব্ধ করে। দুঃখজনকভাবে কারো কারো ক্ষেত্রে এই অভ্যাসটি ছাত্রাবস্থা থেকে অবসর পরবর্তী বয়স পর্যন্ত একই থাকে। ব্যক্তিত্বের আরেকটি বিষাক্ত রোগ হচ্ছে এৎধহফরড়ংব ফবষঁংরড়হধষ ফরংড়ৎফবৎ বা এৎধহফরড়ংরঃু (গ্রান্ডিওসিটি)।
এরা নিজেকে সবসময় সব বিষয়ে এৎধহফ ভাবে এমনকি চরম অযোগ্যতায়, শুন্য পড়াশুনায়। একাডেমিক আলোচনার ধৈর্য বা যোগ্যতার চাইতে ফালতু তর্কে নিবেদিত। বিশ্বাস করে সমাজ, রাষ্ট্র বা বিশ্বের নামকরা মানুষ সে। তার বোধশক্তি সারাক্ষণ তাড়া করে সমাজ বা চারপাশ তার এই গ্রান্ডিওসিটি নিয়ে কথা বলছেনা কেন, তালি দিচ্ছে না কেন। অতীতের কোন সামান্য অর্জনকেও গ্র্যান্ড আকারে উপস্থাপনার নেশাগ্রস্ততার ফলে বাস্তবতা থেকে বহুদূরে থাকে। নার্সিসিসমের সাথে গ্রান্ডিওসিটি যোগ হলে প্রবল হিংসুটে হয়। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসা খুব জটিল হয়ে যায়। কাউন্সিলিং না করে দীর্ঘদিন এই অভ্যাস লালন করলে সাইকোসিস বা অপ্রকৃতিস্থতার কারণ হতে পারে। লেখক: গবেষক
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট